জমজমাট ভূতের আড্ডা ৭

জমজমাট ভূতের আড্ডা ৭

• আব্দুর রহমান আল হাসান
ক্যাপ্টেন হাসান গ্রামের সকল ঘরে তল্লাশী করার ইচ্ছা করলেন যেসব ঘরে কেউ নেই এবং যেগুলোতে আছে, সবগুলোতেই যেহেতু গ্রামে এখন কোনো মাতবর বা রক্ষক নেই, তাই কারো থেকে অনুমতি না নিয়েই তিনি তল্লাশী অভিযান শুরু করলেন একেক ঘরে গ্রামের প্রায় অনেক ঘরেই তল্লাশী দিলেন সে সময় হঠাৎ এক ব্যক্তি দৌঁড়িয়ে এসে বললো, স্যার হঠাৎ গ্রামে বাঘ দেখা দিছে ক্যাপ্টেন অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, এই গ্রামে বাঘ আসবে কোথা থেকে? সে বললো, জানি না স্যারক্যাপ্টেন তখন সেই বাঘটা কোথায় দেখা গিয়েছে, সেখানে গেলেনএকটা বাঘ -বাড়ি -বাড়ি ঘুরাঘুরি করছেক্যাপ্টেন হাসান চাইছিলেন বাঘটাকেশুট করতেকিন্তু দেশের আইনে বাঘ হত্যা নিষেধতাই তিনি সেটাকে আর কিছু করলেন নাতিনি সেখান থেকে চলে আসলেন এবং সেখানকার লোকদের বলে আসলেন সাবধানে থাকতেপূনরায় তিনি ঘরবাড়ীতে তল্লাশী দিতে লাগলেনহঠাৎ নুহাশপুর গ্রামের উত্তর-পশ্চিম কোণে একটা ঘর দেখলেনসেখানে তেমন লোকজন থাকে নাকেউ উক্ত বাড়িতে যায় নাসেটা নিয়ে একটা প্রসিদ্ধ ভৌতিক কাহিনী এই গ্রামে প্রচলিত আছেঘটনাটা এরকম:-

একবার বিদেশ থেকে এক ব্যাক্তি এখানে বেড়াতে আসলোআর সে উক্ত বাড়িতে গিয়ে উঠলোওই বাড়ির মালিক তখন জীবিত ছিলেনতিনি তাদের যথেষ্ঠ যত্ন-আত্তি করলেনতাদের সাথে একটা ছোট বাচ্চা ছিলযার বয়স মাত্র ছয় বছর ছিলসে প্রায়ই সময় উক্ত বাড়ির পশ্চিম পাশে গিয়ে বসে থাকতো বা খেলা করতোআর সেখানে অনেক বড় একটা পুকুর ছিলসেই পুকুরে উক্ত বাড়ির মালিক ভয়ংকর সব মাছ চাষ করতেনছেলেটা এসব জানতো নাওই পুকুরে কারো নামা নিষেধ ছিলএকদিন সে খেলতে খেলতে উক্ত পুকুরের কাছে চলে যায়তখন পা পিছলে সে পুকুরে পড়ে যায়তার মা তখন পাশেই ছিলছেলের পানিতে পড়ে যাওয়া দেখে তিনি চিৎকার করে উঠলেনতৎক্ষণাত মালিক দৌড়ে এসে দেখেন এই অবস্থাতিনি তার মাকে পুকুরে নামতেনিষ্ধে করলেনকিন্তু সন্তানহারা মা কেন শুনবে তার কথাতিনি ঝাঁপ দিলেন পুকুরেঅমনি পুকুরের নিচ থেকে ইয়া বড় একটা মাছ ভেসে উঠে তাদের দুইজনকে মুখে  নিয়ে পানির নিচে চলে গেলছেলেটির বাবা তখন একটু বাহিরে গিয়েছিলেনএসে যখন শুনলেন এই অবস্থাতখন তার মাথা খারাপ হয়ে গেলতিনি উক্ত বাড়ির মালিককে পাশে থাকা দাঁ নিয়ে কোপ দিতে গেলেন অমনি মালিক সরে গিয়ে তাকে ডাক্কা দিয়ে পুকুরে ফেলে দিলেনএকসাথে তিনজনেরই জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটলো

এই হলো উক্ত পুকুরের কাহিনীক্যাপ্টেন হাসান এই বাড়িতে এসে তল্লাশি দিলেনতখন হঠাৎ এই বাড়িতে কিছু অদ্ভূত জিনিষ আবিষ্কার করেনযেমন,এখানকার আলমারিগুলো নতুনঅথচ ক্যাপ্টেন হাসান গ্রামবাসীদের  থেকে জেনেছেন,এই বাড়িতে গত পাঁচ বছর  কেউ থাকে নাতিনি তার এক সহকর্মীকে বললেন,আলমারিতে কি আছে দেখো তোতার কথায় তিনি সেটা খুললেনখুলে ভিতরের জিনিষ দেখে সবাই অবাক হয়ে গেলসাধারণত ভূতের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য যেসব জিনিষপত্র ব্যবহার করা হয়, সব এখানে আছেক্যাপ্টেন তখন পুরো বাড়ি চেক দিলেনঘরের এখানে ওখানে ছড়িয়ে আছে টাকা-পয়সাতবে অধিকাংশই নকল টাকাএর মধ্যে হঠাৎ একজন একটা রুম আবিষ্কার করলোসেখানে একটা সুরঙ্গ খোঁড়া আছেক্যাপ্টেন তখন বললেন, তার মানে এরা মূলত মানুষআর তারা বিভিন্ন স্থানে যাতায়াতের জন্য এই সুরঙ্গ ব্যবহার করে থাকেআর গ্রামবাসীরা যত ভূত দেখেছে সব- এই মুখোশের কারসাজিক্যাপ্টেন তখন তার রিভলভার নিয়ে আর অন্যান্যরা সম্পূন্ন পজিশন নিয়ে উক্ত সুরঙ্গে প্রবেশ করলোঅনেকদূর যাওয়ার পর তা একটা ঘরের মধ্যে গিয়ে উঠলোতারা সেই ঘরে অভিযান চালিয়ে কাউকেই ধরতে পারেন নিকারণ কেউই নেইতবে সুখের বিষয় হলো, নুহাশপুর গ্রামের যত দামী দামী জিনিষ হারিয়েছে, সবই এখানে আছেক্যাপ্টেন তখন দেখলেন টেবিলের উপর একটা কাগজ রাখাতাতে লেখা, ক্যাপ্টেন! মনে রেখো, আমরা আবার আসবোভূতেরা কখনো মরে না

সমাপ্ত !!

#buttons=(আমি সম্মত !) #days=(20)

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনি ভালো আছেন। আমার সম্পর্কে আরো জানুনLearn More
Accept !