প্রথম জাতীয় পর্যায়ে লেখার অনুভূতি

প্রথম জাতীয় পত্রিকায় লেখালেখি

আব্দুর রহমান আল হাসান 

গত ১০ই জুলাই ২০২১ তারিখ।আামার শ্রদ্ধেয় বড়ভাই ইয়াছিন নিজামী ভাইয়ের লেখা পাথেয় টুয়েন্টিফোর ডট কমের ওয়েবসাইটে আসে। তবে এটাই প্রথম নয়, আমার যতুটুকু মনে পড়ে তার সর্বপ্রথম লেখা ২০২০ সনের কোনো একদিন পাথেয়তে আসে। সেটা তার শুরু। এরপর থেকে তার ধারাবাহিকতা চলছে অবিরত।তিনি পাথেয়, আওয়ার ইসলাম, যুগান্তরসহ আরো বেশ কিছু পত্রিকায় লিখেছেন। তাকে দেখে আমি প্রায়ই অনূপ্রেরিত হয়েছি। ছোটবেলা থেকেই লেখালেখি এবং বই পড়ার প্রতি আমার আলাদা একটা ঝোঁক ছিল। সর্বপ্রথম নিজ থেকে গল্প লিখেছিলাম হয়তো ২০১৫ সনে । তখন আমি হেফজ বিভাগের বেফাক পরিক্ষার্থী ছিলাম। সে সময় আমার এক উস্তাদ ছিলেন মাওলানা কামরুল ইসলাম নামে। যাকে আমরা দুষ্টমি করে মামা হুজুর বলে ডাকতাম। তিনি সর্বপ্রথম আমাদের বিভিন্ন বইপড়া, ম্যাগাজিন পড়া এবং লেখালেখি করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। তার এই অনুপ্রেরণায় আমি সর্বপ্রথম কোনো এক শিরোনামে একটা গল্প এবং একটা কবিতা লিখি সম্পূন্ন নিজ থেকে। সেই লেখাগুলো বর্তমানে আমার নিকট নেই। কালের দুর্যোগে তা হারিয়ে গিয়েছে। কয়েকটা আমার ছোট ভাই ছিঁড়ে ফেলেছে। সেখান থেকে আমার লেখালেখির ময়দানে হাতেখড়ি শুরু।

আমি ছোটবেলা থেকে যেসব ম্যাগাজিন পড়তাম, তার মধ্যে অন্যতম হলো কিশোর কণ্ঠ,কিআ,বিজ্ঞানচিন্তা,আল-কাউসার। তাছাড়া সময় অসময় আরো অনেক ম্যাগাজিন পড়েছি।আমি ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন পত্রিকায় লেখা পাঠাতাম। কিআ,আল-কাউসারে ২০১৬ সন থেকে অসংখ্য, অগণিত লেখা পাঠিয়েছি। কিন্ত তারা কখনো আমার লেখা গ্রহণ করে নি। প্রথম প্রথম খারাপ লাগতো। কিন্তু একসময় তা আর লাগতো না। তাই আমি ধরেই নিয়েছিলাম, আমার লেখা কখনো কোনো পত্রিকায় ছাপাবে না। তবে আমি হতাশ হই নি। আরবী একটা বাক্য সর্বদা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে। ‘আস সা’অয়ূ মিন্না ওয়াল ইতমামু মিনাল্লাহ।” চেষ্টা আমাদের.সফলতার মালিক আল্লাহ তা’আলার। এভাবেই আমি সর্বদা লিখতাম। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? গত কয়েকমাস পূর্বে রহস্য পত্রিকায়ও লেখা পাঠিয়েছি। ফিরতি মেইলে তারা জবাব দিয়েছে, আপনার লেখা গ্রহনযোগ্য নয়। একজন নবীন লেখকের জন্য এটা যে কত হতাশাজনক বিষয়, তা শুধু সে নিজেই বলতে পারবে। যাই হোক, কোথাও যখন আমার লেখা তারা ছাপাচ্ছিল না তখনই আমার মাথায় আসে, আমার লেখা আমিই ছাপাবো। কিন্তু কিভাবে? এটা ভাবতেই আমার মাথায় আসলো একটি ওয়েবসাইট খোলার পরিকল্পনা। যেই ভাবা সেই কাজ। খুললাম আমার নিজস্ব ওয়েবসাইট। এটাতেই আপাতত লেখালেখি করতে লাগলাম। আমার বন্ধুরা এবং আমার শুভাকাঙ্খীরা আমাকে অনেক অনুপ্রেরণা দিয়েছে। এদের মধ্যে নিজামী ভাই, সালমান,মাসূদ ভাই অন্যতম। এভাবেই আমি ২০২০ সন থেকে ওয়েবসাইটে নিজে নিজে লিখতাম। ভিউয়ার্সও হতো কিছুটা। এরপরের কাহিনীই হলো আজকের আলোচ্য বিষয়।১০ তারিখে নিজামী ভাইয়ের একটা লেখা ছাপালো পাথেয় পত্রিকা। আমি দেখে তাকে বললাম, আপনাদেরটাই শুধু ছাপায়। আমরা দিলে ছাপাবে না। এটা শুনে তিনি আমাকে বললেন, একবার পাঠিয়েই দেখো। ভাবলাম তাই করি। আমি কিছুদিন ধরে আব্বাসীয় খেলাফতের আমলে বাগদাদ নগরী নিয়ে পর্বভিত্তিক একটা লেখা লিখছিলাম। সেটার একটা লেখা ছিল, আব্বাসীয় আমলের সময় বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত লাইব্রেরী. বাইতুল হিকমাহ নিয়ে। আমি সেই লেখাটা দুপুরে পাথেয় পত্রিকার ই-মেইলে পাঠিয়ে দিলাম। আমি নিশ্চিত ছিলাম, তারা এটা ছাপাবে না। এমন ধারণা করেই আমি বসে ছিলাম। এভাবেই এক এক করে ঘন্টা অতিবাহিত হচ্ছিলো। একটা সময় আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে, আমি যে তাদের নিকট লেখা পাঠিয়েছি। তারপর সেদিন আমি এশার পর একটা গল্প লিখলাম ক্যাপ্টেন হাসান সিরিজেজমজমাট ভূতের আড্ডা শিরোনামের ছয় নম্বর পর্ব। এটা আমি আমার ওয়েবসাইটে আপলোড করে থাকি। পুর্বেরগুলোও আপলোড করেছি। আমি উক্ত পর্বটা যখন আপলোড করলাম তখনই একটা মেইল আসলো। দেখলাম পাথেয় থেকে আসছে। আমি শিওর ছিলাম তারা বলবে, আপনার লেখা অগ্রহনযোগ্য। তারপরও আমি মেইল চেক করার জন্য ভিতরে প্রবেশ করলাম। কিন্তু তাদের লেখা দেখে তো আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল। তারা নিখেছে, অভিনন্দন। আপনার লেখা আমাদের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। তারা লিংক দিয়ে দিয়েছিল। সেখান থেকে আমি লেখাটি দেখলাম।

 দীর্ঘ ৭/৮ বছর পর কোনো পত্রিকা আমার লেখা গ্রহণ করলো। আমার খুশি তখন দেখে কে! আমি তখন লেখাটি সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার জন্য যেই ক্লিক করলাম অমনি আমার ইন্টারনেট মেগাবাইট শেষ হয়ে গেল। এতে যে আমার কেমন রাগটা উঠেছিল, তা শুধুমাত্র আমি এবং আল্লাহই জানেন। কিন্তু নেট শেষ হলে কি হবে, আমাকে তো কাজটা করতেই হবে। ছোটভাইকে বললাম হস্টপট কানেকশন দিতে। তারপর সেই নেট দিয়ে আমি লেখাটি শেয়ার করি। লেখাতে নিজামী ভাই কমেন্ট করেছিল, আমার অনুভূতি শেয়ার করতে। তার কথায় শেয়ার করলাম আমার কিঞ্চিৎ অনুভূতি। বাকী অনুভূতিটুকু আমার নিজের কাছেই গোপন থাকুক। হোক না কিছু আপন আর কিছু গোপন।

#buttons=(আমি সম্মত !) #days=(20)

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনি ভালো আছেন। আমার সম্পর্কে আরো জানুনLearn More
Accept !