শৈশবের বইপ্রেমী - আব্দুর রহমান আল হাসান

আব্দুর রহমান আল হাসান

 
আমার শৈশবের সেই দিনটির কথা আজো মনে আছে। বয়স তখন সম্ভবত ৯ বছর ছিল। হেফজ বিভাগে পড়তাম। একাডেমিক পড়াশোনার বাহিরে অনেক অবসর সময় থাকতো। ওই সময়টায় অন্যন্যরা দুষ্টমি , ক্যারাম খেলতো। আমি কিছুদিন ক্যারাম খেলার পর বুঝলাম, এই খেলা আমার জন্য নয়।

আমার সাথে তখন আমার চাচাতো ভাই জাবেরও পড়তো। সে আমার সিনিয়র ছিল। একদিন হঠাৎ দেখলাম, বাসা থেকে সে বই এনে পড়ছে। আইডিয়াটা আমারও ভালো লাগলো। আব্বুকে বললাম, একটা সীরাত বই কিনে দেন। তিনি রাজী হলেন। দিনকয়েকের মধ্যেই বাইতুল মোকাররম থেকে একটা সীরাত বই এনে আমাকে দিলেন।
এতটা খুশী তখন হয়েছিলাম বলার বাহিরে। খাওয়ার সময়, বিকেলে, রাতে ও চলতো আমার বইপড়া। সেটা এতটা নির্ভরযোগ্য ছিল না। কিন্তু সে সময় এটা আমার কাছে অনেক বড় ছিল। ৪০০ পৃষ্ঠার বইটা শেষ করেছিলাম ১ মাসের মধ্যে। ৯ বছরের একটা ছেলে কতুটুকু বাংলা পড়তে পারে, সেটা নিশ্চয়ই সকলের জানা আছে।
আমি বইটা শেষ করেই আরো নতুন বই পড়ার জন্য উদ্গ্রীব হয়ে পড়লাম। আব্বুকে বললাম, আরো কিছু বই কিনে দেন।
সেই সপ্তাহে বাসায় আসার পর আব্বু আমাকে বাসার পার্শ্ববর্তী একটা লাইব্রেরীতে নিয়ে যান। সেখান থেকে কাসাসুল আম্বিয়া নামে ১০০০ পৃষ্ঠার উপরে একটা বই কিনি।
মাদ্রাসায় এসে আমার সময় যেন কাঁটে না। কখন সময় শেষ হবে, কখন পড়বো বইটি, আকুল হয়ে থাকতাম। বইটা শেষ করতে সম্ভবত ৪ মাস লেগেছিল।
এই বইটা পড়ার পর তাজকিরাতুল আওলিয়া নামে আরেকটা বই কিনলাম। সেটাও পড়লাম।
আমার সর্বপ্রথম বই পড়ার সূচনা এভাবেই ঘটে।

আমি বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ের উপর বই পড়তে আগ্রহ পেয়েছি। গত দুই বছর ধরে ইসলামী ইতিহাস ও বিশ্বের ইতিহাসে অনেকটা আগ্রহী হয়ে পড়েছি।
মুসলিম ইতিহাস সম্মিলিত সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য গ্রন্থ মনে হয়েছে,
মুসলিম উম্মাহর ইতিহাস বইটি।
লেখনীর ঝংকার, ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পড়লে মনে হয়, আমি যেন সেই সাহাবাদের যুগে অবস্থান করছি। আমার চোখের সামনে ঘটনাগুলো ঘটছে।
আচ্ছা, আপনার পড়া সবচেয়ে ভালো বইটির নাম কি আমাকে বলবেন?

#buttons=(আমি সম্মত !) #days=(20)

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনি ভালো আছেন। আমার সম্পর্কে আরো জানুনLearn More
Accept !