আব্বাসী খেলাফতের সময় প্রতিষ্ঠিত একটি লাইব্রেরীর নাম হলো, বাইতুল হিকমাহ । তৎকালীন সময় এটি পৃথিবীখ্যাত লাইব্রেরী ছিল । আর এটি প্রতিষ্ঠিত হয় বাগদাদে । আর এটি প্রতিষ্ঠা করেন খলিফা হারুনুর রশীদ এবং তার পুত্র আল মামুন । খলিফা হারুনুর রশীদ ৭৮৬-৮০৯ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন পরিচালনা করেন । এরপর খেলাফতের দায়িত্বভার গ্রহন করে তার সন্তান আল মামুন । তিনি ৮১৩-৮৩৩ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত শাসন পরিচলনা করেন । তৎকালীন বাগদাদ খলিফা আল মামুনের সময় জ্ঞান-বিজ্ঞানের সর্বোচ্চ স্তরে উত্তীর্ণ হয়। খলিফা আল মামুন অনেক জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিকে বাইতুল হিকমাহতে নিয়ে আসেন। ৯ম থেকে ১৩ শতক পর্যন্ত পারসিয়ান ও খ্রিস্টানসহ অসংখ্য পণ্ডিত ব্যক্তি এই গবেষণা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত ছিলেন । এসর পণ্ডিতরা অন্যান্য ভাষা থেকে আরবীতে গ্রন্থ অনুবাদ ও সংরক্ষণের পাশাপাশি অন্যান্য অনেক ক্ষেত্রে অবদান রাখেন । খলিফা আল মামুনের শাসনামলে বাগদাদে মানমন্দির স্থাপিত হয় । তখন বাইতুল হিকমাহ গণিত, জ্যোতির্বিদ্যা, চিকিৎসাবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, প্রাণীবিদ্যা, ভূগোল এবং মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যাসহ আরো অনেক জ্ঞানচর্চায় অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠে । তারা প্রাচীন ভারতীয় , গ্রীক, পারসিয়ান রচনা ব্যবহার করে বৈশ্বিক জ্ঞানের বিরাট ভাণ্ডার অর্জন করেন এবং এর মাধ্যমে তাদের নিজেদের আবিষ্কারের দিকে অগ্রসর হন । নবম শতকের মধ্যভাগে বাইতুল হিকমাহ ছিল পৃথিবীর সর্ববৃহৎ গ্রন্থভান্ডার । বর্বর তাতাররা যখন বাগদাদ আক্রমণ করে তখন তারা এই লাইব্রেরীটি ধ্বংস করে দেয় ।
![]() |
শিল্পীর তুলিতে বাইতুল হিকমাহ এ জ্ঞানচর্চা |
যখন চেঙ্গিস খানের বাহিনী বাগদাদ আক্রমণ
করে , তখন তারা শহরের অন্যান্য জিনিষ ধ্বংস করার পাশাপাশি বাইতুল হিকমাহ ও ধ্বংস করে
ফেলে । তারাএর বইগুলো দজলা নদীতে ফেলে দেয় । সে সময় নাসিরুদ্দিন আল তুসি প্রায় ৪০,০০০
হাজারের মত পাণ্ডুলিপি রক্ষা করতে সক্ষম হন । যা তিনি তাতাররা বাগদাদ অবরোধের পূর্বে
মারাগেহতে নিয়ে যান ।
ঐশ্বর্য নগরী বাগদাদ প্রবন্ধটি পড়ুন ।
পরবর্তী পর্ব আসছে..................................
আব্দুর রহমান আল হাসান
লেখক