পৃথিবীবাসী আজ আনন্দ উদযাপন করছে । তারা নতুন বছরকে স্বাগত জানাচ্ছে । এই মুহুর্তে পৃথিবীর ঘড়ি অনুযায়ী রাত ১১:৪৫ মিনিট । অনেকেই বিভিন্ন রকমের বাজি ফুটাচ্ছে । পাশাপাশি ফানুস , তারাবাতি তো আছেই । পৃথিবীতে এখন মারাত্মক শব্দদূষণ হচ্ছে । পাশাপাশি প্রচুর কার্বন-ডাই-অক্সাইডের বিশাক্ত গ্যাস উৎপন্ন হচ্ছে । মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির বিখ্যাত আয়ূনিধেরক যন্ত্রের মাধ্যমে পৃথিবীর বয়স কতুটুকু কমছে , তা পরিমাপ করা হচ্ছে । পৃথিবীতে এখন প্রতি মিলি সেকেন্ডে ১০ টন করে কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হচ্ছে । এটা যে কত ভয়ংকর ব্যাপার , পৃথিবীবাসীর এ সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধারণা নেই । পৃথিবীবাসীরা যে কত বোকা , তা প্রমাণিত হয়েছে কিছুদিন আগে । তারা নাকি পৃথিবীর চারপাশে কৃত্তিম উপগ্রহ নির্মাণ করে শক্তিশালী নেটওয়ার্ক তৈরী করবে । পৃথিবীর ঘড়ি অনুযায়ী এখন রাত ১২;৫৮ মিনিট । এই মুহুর্তে পৃথিবীতে প্রতি মিলি সেকেন্ডে ২৫ টন করে কার্ন-ডাই-অক্সাইড এবং ০.২ গ্রাম করে টিয়াক্সিড উৎপন্ন হচ্ছে । মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির আয়ূনিধেরক যন্ত্রে দেখাচ্ছে , পৃথিবীর বয়স এখন এমন দূর্ষণের কারণে মিনিটে ৭৫৬ বছর করে কমছে । পৃথিবীবাসীরা যেই মিশন নিয়ে নেমেছে , এর মধ্যে সাকসেসফুল হওয়ার সম্ভাবনা ২৫% । এই মূহুর্তে পৃথিবীর সময় ১২:০০ মিনিট । নতুন বছর শুরু হয়েছে । মুহুর্তের মধ্যে পৃথিবীর শব্দদূষণ ৩০% বেড়ে গিয়েছে । আর কার্বন-ডাই-অক্সাইড কি পরিমাণে বাড়ছে , তা দেখে সবার চোখ কপালে উঠে যাওয়াার মত অবস্থা ! মিল্কিওয়ের আয়ূনিধেরক যন্ত্রে এখন পৃথিবীর বয়স ২০২৬ বছর করে কমছে ।এরা নাকি আবার সভ্য জাতি । কিভাবে তারা সভ্য জাতি হলো ? যারা নিজেদের গ্রহ ধ্বংস করে আনন্দ-উল্লাস করে , তারা কখনো সভ্য জাতি হতে পারে না ।
(২)
ক্যাপ্টেন এষ পাহাড় থেকে আকাশ দেখছেন । এই পাহাড়রা একেক সময় একেক জায়গায় অবস্থান করে । ক্যাপ্টেনের পাশে বিখ্যাত জ্যোতির্বিদ মিহ দাড়িয়ে আছে । মিহের পাশে পৃথিবীর মানুষের মত দেখতে একটি রবোট দাড়িয়ে আছে । এষ রবোটটি দেখে কিছুক্ষণ হাসলেন । মিহ অবাক হয়ে এষের হাসি দেখছে । কারণ , এষের বর্তমান হাসির ভঙ্গিটা মিহের কাছে পরিচিত নয় । রবোটটি তখন বলে উঠলো , ক্যাপ্টেন , আপনার হাসির কারণটা আমি বুঝতে পেরেছি । এষ হো হো করে হেসে বললো , তুমি তো তা পারবেই ।
অথচ দেখো , তোমাকে আমরা আমাদের সাধারণ টেকনোলজি দিয়ে বানিয়েছি । তারপরও তুমি পৃথিবীর মানুষ থেকে বুদ্ধিমান । পৃথিবীবাসীরা গত ২০০ বছরে যত রবোট বানিয়েছে , সবগুলোতে কোনো না কোনো ত্রুটি ছিল । আর যত নতুন জিনিষ আবিষ্কার করে , তার মধ্যে বিধ্বংসী জিনিষ আবিষ্কার করে ৬৫% । মিহ জিজ্ঞাসা করলো , ক্যাপ্টেন ট্রিয়ান গ্যালাক্সিতে গত মাসে আমরা যে নভোযানটি পাঠিয়েছিলাম , তার আপডেট খবর কি ?
: ট্রিয়ানরা আমাদের প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে না । তারা চাচ্ছে , পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে ।
: এতে তো পৃথিবীর মানুষ আরো হিংস্র হয়ে উঠবে ।
: কিন্তু তারা তো চাচ্ছে , পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে ।
: আমাদের ট্রিয়ানদের থামাতে হবে ।
: ট্রিয়ানদের চারপাশে সার্কেল তৈরী করো । তা হলে হয়তো তাদের থামানো যাবে । গ্রীসকে খবর দাও । তার সাথে জরুরি কথা আছে ।
ট্রিয়ান গ্যালাক্সি । এখানে ৪০০ কৌটি গ্রহ আছে ।প্রাণের বসবাস ১০০ কৌটি গ্যালাক্সিতে । এখানকার বুদ্ধিমান প্রাণীদের কাছে পৃথিবী খুবই আগ্রহের বিষয় । কিন্তু তারা পৃথিবীর সাথে কোনোরুপ কন্ট্রাক্ট করতে পারে নি । কারণ , পৃথিবী মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির অধীনে । আর মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির প্রধানরা কেন যেন পৃথিবীতে কোনো রুপ সিগন্যাল পাঠাতে চান না । এ জন্য পৃথিবীবাসী আজও ”পৃথিবীর বাহিরে প্রাণ আছে নাকি “ এটার কোনো সমাধান বের করতে পারে নি । ট্রিয়ান গ্যালাক্সির প্রধান দৃশ একটি কনফারেন্সের আয়োজন করেছেন । তাতে সকল ট্রিয়ান গ্রহগুলোকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে । হয়তো সকলে এসে পৌছাতে ২০ দিন সময় লাগবে ।
আমেরিকা , নিউইয়র্ক ।ড. স্টিন ল্যাবে বসে আছেন । আজও ১৯৬৯ সনের ওয়াও সমাধান অমিমাংসিত রয়ে গিয়েছে । ওয়াও সিগন্যানের ব্যাপারে অনেক বিজ্ঞানী বলেছিলেন , এটা এলিয়েনদের নিকট হতে প্রেরিত সংবাদ । তবে কোনো কোনো বিজ্ঞানী এটা অস্বীকারও করেছেন । ড.স্টিন মহাকাশ স্টেশনের সাথে যোগাযোগ করলেন । ধারণা করা হচ্ছে ,পৃথিবীর আয়ূ দিন দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে । কিন্তু হিসাবমতে , পৃথিবী আরো ট্রিলিয়ন বছর টিকে থাকবে । মহাকাশ স্টেশন থেকে ড. লুইস কন্ট্রাক্ট রিসিপ করলেন । ড. স্টিন তাকে বললেন , পৃথিবীতে মাঝেমধ্যে ছোটখাটো সমস্যা হচ্ছে । মহাকাশ স্টেশন থেকে এর সমাধান প্রয়োজন । ড. লুইস জিজ্ঞাসা করলেন , কেমন সমস্যা ?
: স্যাটেলাইটগুলো মাঝেমধ্যে ভুল তথ্য দিচ্ছে ।
: এতে হয়তো আমাদের প্রতিদ্বন্দী কোনো দেশের হাত আছে ।
: স্যার , জনগণ তো আর প্রতিদ্বন্দী দেখবে না । তারা বিজ্ঞানের উন্নতি চায় ।
: আচ্ছা , আমি এ বিষয়ে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নিবো ।
বেইজিং , চীন ।
ভিনগ্রহী প্রাণীদের সাথে যোগাযোগ করা । বেইজিং এ গত কয়েকদিন আগে একটি কনফারেন্স হয়েছিল । সেখানে বিশ্বের বড় বড় মহাকাশ বিজ্ঞানীরা উপস্থিত ছিলেন । সেখানে কয়েকজন বিজ্ঞানী একটি থিউরিক্যাল মত পেশ করেছিলেন । মহাকাশে বিভিন্নরকম প্রাণী আছে হয়তো । কেউ বুদ্ধিমান হবে আর কেউ নিম্ন বুদ্ধির অধিকারী হবে । মানব সমাজ মহাকাশের কোন শ্রেণীর প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত তা বের করতে পারলে অন্যান্যদের সাথে যোগাযোগ সহজ হবে ।
তাদের এ মতের উপর অনেকেই একমত হয়েছেন । চীন সরকার মহাকাশে তাদের লড়াইয়ের জন্য অনেক বড় বড় বাজেট হাতে নিচ্ছে । চীনা বিজ্ঞানীদের প্রসিদ্ধ ওয়াও সিগন্যালের ব্যাপারে কোনো ইন্টারেস্ট নেই ।কারণ তারা মনে করে , ওয়াও সিগন্যালের ব্যাপারটা সম্পূন্ন বানোয়াট । এ বিষয়ে আমেরিকান কিছু প্রসিদ্ধ বিজ্ঞানীদের ও মত রয়েছে ।
পর্ব ২ পড়তে এখানে ক্লিক করুন
আব্দুর রহমান আল হাসান
লেখক