ট্রিয়ানদের পৃথিবী দখল ২

ট্রিয়ানদের পৃথিবী দখল ২

()

ক্যাপ্টেন এষ তার অফিসে বসে আছেন ।প্রত্যেকটি গ্রহের আপডেট খবর দেখছেন তিনি পৃথিবীর চারপাশে আরো তিনটি কৃত্তিম গ্রহ পাঠিয়েছে আমেরিকানরা এটা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকরমনে মনে বললেন ক্যাপ্টেন উষান গ্রহে ক্যাপ্টেন মিহকে থাকতে বললেন সেখানে তারা পদার্থ সম্পর্কে একটি প্রকল্প তৈরী করবেন হঠাৎ বেলের আওয়াজে ক্যাপ্টেন এষের ভাবনায় ছেদ পড়লো গ্রীস দাড়িঁয়ে আছে এষ তাকে ভিতরে আসতে বললেন তারপর এষ রুমের এক কোণে ওয়াল কম্পিউটারে ক্লিক করার পর একটি ট্যানেলের মত রাস্তা বেরিয়ে এলো তারা দুইজন তাতে নেমে পড়লেন এই ট্যানেলটি গতি সেকেন্ডে ৫০ আলোকবর্ষ তারা মিনিট দুয়েক ট্যানেলে চলার পর ট্যানেল থেমে গেল ক্যাপ্টেন এষ গ্রীসকে মিল্কিওয়ের দক্ষিণ-পূর্বকোণে অবস্থিত জেড-১৭ গ্রহে নিয়ে গেলেন এই গ্রহটি ১০ বছর পূর্বে গ্রীস আবিস্কার করেছিল গ্রহটির বয়স খুব কম মাত্র ১৭০ বছর মিল্কিওয়ের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক এখনও এই গ্রহ সম্পর্কে কিছুই জানে না ক্যাপ্টেন এষ এই গ্রহে অনেক বড় একটি ল্যাব তৈরী করেছেন মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির অনেক বড় বড় ১০০ জন বিশেষ বিজ্ঞানী এই গ্রহে গবেষণায় রত আছেন আর সহকারী রবোটের সংখ্যা তো অসংখ্য

জেড-১৭ গ্রহের নীল মাটিতে ক্যাপ্টেন এষ আর গ্রীস একসাথে হাঁটছেন বর্তমানে সবচেয়ে আতঙ্কিত বিষয় হলো, পৃথিবী পৃথিবীর অধিবাসীরা অক্সিজেনের মত ভারী গ্যাস নির্ভর হওয়ায় তারা দুর্বল জাতি আর তাদের শরীর তুলার মত তুলতুলে কিন্তু এরপরও তারা ভয়ংকর ভয়ংকর অভিযান পরিচালনা করছে এরই মাঝে ট্রিয়ানরা অনুমতি ব্যাতিত মিল্কিওয়ের সীমানায় প্রবেশ করে পৃথিবীতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিল শেষ পর্যন্ত মিল্কিওয়ের সৈন্যরা তাদের নির্মূল করে দিয়েছে ওই ট্রিয়ানরাও কম নয় তারাও মৃ্ত্যুর আগে একটি সিগন্যাল পৃথিবীতে প্রেরণ করে এই জন্য পৃথিবীর অধিবাসীদের অনেকেই এলিয়েনদের বিশ্বাস করে ট্রিয়ানদের পৃথিবী সম্পর্কে আগ্রহ আছে এই কারণে ,পুরো দুনিয়ায় অক্সিজেন গ্যাস নির্ভর গ্রহ শুধু পৃথিবী আর পৃথিবীর অধিবাসীরাই শুধু অক্সিজেন নির্ভর ক্যাপ্টেন এষ গ্রীসকে বললেন , ট্রিয়ানরা তো আমাদের কথা শুনছে না কী করা যায় ?

গ্রীস বললো , আমাকে দায়িত্ব দিন সেনাবাহিনী দিয়ে তাদের কয়েকটা গ্রহে আক্রমন করি তাহলে তারা আর আমাদের সীমানায় আসার সাহস পাবে না

: আমরা ধ্বংস করার জন্য অস্ত্র বানাই নি

: ছাড়া তো আর কোনো উপায় দেখছি না

: আছে উপায় আছে

: সেটা কী ? ক্যাপ্টেন

: মিহকে দায়িত্ব দিয়েছি , ট্রিয়ানদের চারপাশে সার্কেল তৈরী করতে

: কিন্তু এতে তো আমরা কিছুটা ঝামেলায় পড়বো

: কেমন ঝামেলা ?

: ট্রিয়ানদের সাথে আমাদের সীমানা ,একপাশে সুতরাং আমরা একপাশে সার্কেল তৈরী করতে পারি

: হুম তুমি ঠিক বলেছো বিষয়টি আমি ভুলে গিয়েছিলাম তুমি মিহকে একপাশেই সার্কেল তৈরী করতে বলো আর সীমানায় নজরদারি বাড়াও  

ইন্টারন্যাশনাল স্যাটেলাইট অব আর্থ যুক্তরাষ্ট্রের বেলিংহোমে অবস্থিত দেশের সবচেয়ে বড় স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রক ল্যাব এটি মহাকাশপ্রেমী বিজ্ঞানীদের স্বপ্নের জায়গা মহাকাশের প্রায় ৭০% স্যাটেলাইট এখান থেকে পরিচালিত হয় এখনে কর্মরত প্রত্যেক বিজ্ঞানী কাজে মত্ত আছেন দম ফেলার ফুরসত নেই খবর পাওয়া যাচ্ছে , জিপিএস নিয়ন্ত্রিত স্যাটেলাইটগুলো কয়েকদিন যাবৎ ভুল তথ্য দিচ্ছে বাংলাদেশ থেকে একজন অভিযোগ করেছে , মালিবাগ থেকে সে ইয়ারপোর্ট যাবে না চেনার কারণে সে জিপিএস চালু করে জিপিএস দেখে প্রায় ২৫ মিনিট চলার পর বলা হয় , গন্তব্যে চলে এসেছে সে তাকিয়ে দেখে , তাকে এয়ারপোর্ট না এনে সদরঘাট নিয়ে এসেছে শেষে লোকটির থাইল্যান্ড যাওয়ার ফ্লাইট মিস হয়ে যায় এমন আরো অনেক অভিযোগ বিভিন্ন দেশ থেকে এসেছে ল্যাবে কয়েকজন বিজ্ঞানী এই ত্রুটি নিয়ে কাজ করছেন কিন্তু কোনো সমাধান তারা পাচ্ছে না কারণ স্যাটেলাইটে কোনো ত্রুটি দেখা যায় নি শেষে জিপিএস এর বড় বড় কয়েকটি স্যাটেলাইট সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এতে সবচেয়ে বেশি সুবিধা হয়েছে চীনের কারণ চীনের তৈরী স্যাটেলাইটগুলোতে এমন ঝামেলা হয় নি তাই তারা জিপিএস কন্ট্রাক্টকারী প্রতিষ্ঠান এবং গুগোলের সাথে একটি চুক্তিসই করছে এত ক্ষিপ্ত আমেরিকা কিন্তু  কিছুই করার নেই

 

জিনজিয়াং প্রদেশ চীন শীপ জিং স্যাটেলাইট চীনের সবচেয়ে উন্নত স্যাটেলাইট এটি তিন বছর পূর্বে মহাকাশে প্রেরণ করা হয়েছে এই কৃত্তিমউপগ্রহটি ভিন্ন একটি পদার্থ দ্বারা নির্মিত আমেরিকা এই স্যাটেলাইটটি ধ্বংস করার জন্য ছয়টি স্যাটেলাইট মহাকাশে উক্ষেপণ করে কিন্তু সেগুলো ব্যর্থ হয়ে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চাইনিজদের স্যাটেলাইট বানানোর কৌশল পণ্ডু করতে তাদের খ্যাতিমান কিছু বিজ্ঞানীকে হ্যাইজ্যাক করে এদিকে চীনও কম চালাক নয় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট এবং আমেরিকার সেনাপ্রধানকে তারা উধাও করে ফেলে বেচারা আমেরিকা এতে পড়ে যায় মহাবিপদে অবশেষে চাইনিজদের বিজ্ঞানীদের মুক্ত করে দিয়েছে তারা এরপর থেকে চাইনিজরা নতুন স্লোগান বের করেছে , চাইনিজদের সাথে ঝামেলা করা মানেই নিজেকে জীবন্ত কবর দেয়া

 

()

টিওটি+১২০ এটি মিল্কিওয়ের সীমান্ত পাশ্ববর্তী গ্রহ ট্রিয়ানদের আটঁকানোর জন্য সর্ববৃহৎ সার্কেল তৈরী করেছে মিহ ক্যাপ্টেন যেভাবে আদেশ দিয়েছেন সেভাবেই নির্মিত হচ্ছে ট্রিয়ানরা এখনো এই সার্কেল সম্পর্কে জানে না তারা জানলে খুব খারাপ অবস্থা হতো টিওটি+১২০ গ্রহে এই মাত্র গ্রীস এসেছে মিহ তাকে সার্কেলের নকশাটি দেখালো কিন্তু গ্রীস বিষয়ে কোনো ইন্টারেস্টিং দেখা যাচ্ছে না সে আহত সূরে বললো , তুমি সার্কেল নির্মানের পূর্বেই ট্রিয়ানরা আমাদের সীমানায় চলে এসেছে

: এটা কীভাবে সম্ভব ? হতভম্ব হয়ে বললো মিহ  

: তাদের কিছু আচরণ গত কয়েক বছর যাবৎ আমাকে সন্দেহ সৃষ্টি করছে

: কেমন আচরণ ?

: টেকনোলজির দিক দিয়ে যদিও ট্রিয়ানরা আমাদের সমকক্ষ নয় কিন্তু অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে তারা আমাদের থেকে শক্তিশালী

মিহ গ্রীসের কথার মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝতে পারলো না তখনি টিওটি+১২০ গ্রহে ট্রিয়ানদের হিওকিল্যাক্সাইড শক্তিশালী বোমা আঘাত হানে মুহুর্তের মধ্যে টিওটি+১২০ গ্রহের অর্ধেক ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়ে যায় ট্রিয়ানরা মিল্কিওয়ের শক্তিশালী সার্কেল ভেঙ্গে ফেলেছে মহাকাশে ট্রিয়ানদের যুদ্ধবিমানগুলো ছড়িয়ে পড়লো ট্রিয়ানরা জানে , এই যুদ্ধবিমানগুলোর সাথে তারা লড়াই করতে পারবে না

 

ক্যাপ্টেন এষ গ্রীস এবং মিহের সাথে কন্ট্রাক্ট করার চেষ্টা করছেন তাদেরকে লাইনে পাচ্ছেন না এষ চিন্তিতমনে পায়চারি করতে লাগলেন প্রায় কুড়ি মিনিট পর ক্যাপ্টেন এষ ল্যাবের মনিটরে লাল চিহ্নিত একটি স্থান দেখতে পেলেন জলদি তিনি সেখানে গেলেন উক্ত স্থানে একটি রবোট ধ্বংসস্থুপের পাশে পড়ে আছে ক্যাপ্টেন এষ কম্পিউটারে কোড মেসেজটি অন করলেন সেখানে লেখা , ক্যাপ্টেন গ্রীস TOT+120 গ্রহের গভীরে এক খাদে চাপা পড়ে আছে ক্যাপ্টেন তৎক্ষণাত একটি বড় বাহিনী TOT+120 গ্রহে পাঠালেন তারা ধ্বংসস্তুপে খনন কাজ শুরু করলো প্রায় দিন পর গ্রীসের মৃতদেহ পাওয়া গেল ক্যাপ্টেন তার মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লেন কারণ গ্রীস অনেক বড় বিজ্ঞানী ছিল কিন্তু এষ ব্যাতিত কেউ তার আবিষ্কারের কথা জানতো না একটু পর হঠাৎ মৃতদেহটি দেখে ক্যাপ্টেন এষের কেমন যেন সন্দেহ হলো

 

আমেরিকার একটি মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রে হঠাৎ করে আড়াই হাজার লাখ আলোকবর্ষ দূরের একটি বিস্ফোরণ ধরা পড়ে বিজ্ঞানীদের ধারণা , হিলিয়াম গ্যাসের বিস্ফোরণে এটি ঘটেছে আমেরিকার যেই স্যাটেলাইটগুলোতে ত্রুটি ছিল , সেগুলো সারিয়ে ফেলা হয়েছে এখন আমেরিকা চীনকে ধরাশয়ী করার জন্য ফাঁদ বানাচ্ছে চীনের উপকূলীয় অঞ্চলে আমেরিকা বেশ কিছু হামলা চালিয়েছে চীনের পক্ষ থেকে এখনো কোনো জবাব দেয়া হয় নি

 

বেইজিং , চীন সরকারের সাথে দেশের বড় বড় বিজ্ঞানীরা একটি গোপন বৈঠকের আয়োজন করছে কি নিয়ে আলোচনা হতে পারে , আমেরিকার গোয়েন্দারা ধরতে পারছে না

জুন মাসের ১৭ তারিখ আমেরিকার হোয়াইট হাউজের কাছে খবর এসেছে , আমেরিকান গোয়েন্দারা সফল হতে পারে নি

 

চীন সরকার বিজ্ঞানীদের বললেন , আমেরিকা আমাদের উপর ছোটখাটো হামলা শুরু করেছে অবশ্য আমরা এখনো এর কোনো জবাব দেই নি তাই কি করা যায় আপনারা বলেন বিজ্ঞানীদের মধ্য হতে একজন বললেন , আমি চাচ্ছি , নতুন একটি স্যাটেলাইট তৈরী করতে

: এই হামলার সাথে স্যাটেলাইটের কি সম্পর্ক  ?

: যেহেতু আমেরিকানরা আমাদের উপর ক্ষ্যাপা মহাকাশে কর্তৃত্ব স্থাপনের কারণে

: তাহলে আপনি কি স্যাটেলাইট তৈরী করতে চান ?

: বোমারু স্যাটেলাইট

: এটা দিয়ে কি হবে ?

: এটা অন্যান্য সকল স্যাটেলাইটকে ধ্বংস করে দিবে এর ফলে স্যাটেলাইটের দুনিয়ায় আমরা  সর্বোচ্চ ক্ষমতার অধিকারী হবো

: এটা না হয় বুঝলাম কিন্তু আরো ডেঞ্জারাস হলো , মহাকাশ স্টেশন

: সেটারও ব্যবস্থা হবে

উপস্থিত সকল বিজ্ঞানী কথার উপর সম্মত হলো


পর্ব ৩ পড়তে এখানে ক্লিক করুন

আব্দুর রহমান আল হাসান

লেখক

#buttons=(আমি সম্মত !) #days=(20)

আসসালামু আলাইকুম, আশা করি আপনি ভালো আছেন। আমার সম্পর্কে আরো জানুনLearn More
Accept !