* ফাতেমা উম্মে হাবিবা *
টুম্পার মনে অনেক ইচ্ছা, সে বড় হয়ে চিত্রশিল্পী হবে। কিন্তু মায়ের কথা হলো, সে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। তার বাবার কথাও একই। কিন্তু টুম্পা মাঝের মধ্যে ভাবে, ডাক্তার ভালো নাকি চিত্রশিল্পী ভালো? টুম্পা এটিও ভাবে, হয়তো দু‘টোই ভালো। কিন্তু পরক্ষণেই ভাবে, চিত্রশিল্পীই ভালো। এভাবে একদিন টুম্পা তার স্কুলে গিয়ে তার এক বান্ধবীর কাছে শোনে, তার বান্ধবী আয়শাও নাকি চিত্রশিল্পী হতে চায়। টুম্পা তাকে বললো, আয়েশা! তুমি কি আমাকে তোমার আঁকা ছবিগুলো দেখাবে? আয়েশা বললো, আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি বলো, কেমন ছবি দেখবে? টুম্পা কিছুক্ষণ ভেবে বললো, সুন্দরবনের কোনো ছবি আছে? আয়েশা খানিকটা খোঁজাখুজি করে ড্রয়ার থেকে একটা ছবি বের করলো। সে এটা দুইমাস আগে একেঁছিল। টুম্পা ছবিটি দেখে বিস্মিত হয়ে বললো, ছবিটা তো অনেক সুন্দর!
অন্য একদিন। টুম্পা তার বান্ধবীকে একটা ম্যাগাজিন পড়তে দেখে। তার নাম, কিশোর আলো। সেখানে অনেক গল্প, কমিকস, উপন্যাস ছাপানো হয়। একদিন টুম্পা সাহস করে সেখানে গল্প পাঠাতে চাইলো। এক এক করে প্রায় ৮ টা গল্প পাঠালো। একটাও ছাপানো হয় নি। তাই একদিন টুম্পা রেগে গিয়ে গল্প লেখা বন্ধ করে দিলো। এভাবে প্রায় ৬ মাস কেঁটে গেল। একদিন সে গুগলে একটা আর্টিকেল দেখতে পেল। বিখ্যাত গল্পকার এবং লেখক আব্দুর রহমান আল হাসানের একটি প্রবন্ধ। তিনি সেখানে লিখেছেন, “আমার জীবনের শুরুতে শত শত গল্প বা উপন্যাস লিখে বিভিন্ন ম্যাগাজিনে পাঠিয়েছি। কিন্তু কেউই আমার লেখা গ্রহন করে নি। একটা সময় আমি ভাবলাম, আমার লেখার সমস্যা কি ? আমি নিয়মিত ম্যাগাজিন পড়তাম। তাই গল্প সম্পর্কে আমার খুব ভালো ধারণা ছিল। আস্তে আস্তে ম্যাগাজিন পড়তে পড়তে আমার অভিজ্ঞতার ঝুলি বাড়তে লাগলো। একটা সময় দেখা গেল, আমার আর কষ্ট করে লেখা পাঠাতে হয় না। তারা্ই আমার লেখা এসে নিয়ে যেতো। সফলতা কখনো একদিনে আসে না। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর আসে। তবে চেষ্টা কখনো বন্ধ করতে হয় না।” লেখাটি পড়ে টুম্পা ভাবলো, আমারও বসে থাকলে হবে না। আমার তো মাত্র ৮ টা লেখা গ্রহন করে নি। আর উক্ত স্যারের তো শত শত লেখা বাতিল হয়েছিল। আসলেই সফলতা একদিনে আসে না। তাই টুম্পা আবারও ম্যাগাজিন পড়া এবং লেখালেখির দিকে মনোযোগী হলো। পাশাপাশি ছবি আকঁতেও ভুললো না।