* আব্দুর রহমান আল হাসান *
চটপটে মেয়ে মীম । স্কুলের সবাই তাকে পছন্দ করে । সে কথায় কথায় বলবে , আল্লাহ আমাকে মনে হয় , জোকার বানাবে । সে কখনো মন খারাপ করতো না । কারো কখনো মন খারাপ হলে তারা মীমের নিকট চলে যেতো । মীমের ছোট্ট একটা বোন আছে । নাম মেহেনূর । সে সারাক্ষণ মীমের সাথে খেলাধূলা করে । একদিন হঠাৎ মীমের বান্ধবী ফারিয়া স্কুলে আসে নি । এভাবে কয়েকদিন চলে গেল ।এক সপ্তাহ পর মীম শুনলো ফারিয়া মারা গেছে । তার বান্ধবীর হঠাৎ মৃত্যুতে প্রচুর কষ্ট পেল সে । কিন্তু কিভাবে মারা গিয়েছে তা জানতে পারে নি সে ।ফারিয়ার মা-বাবাও কখনো বলে নি । মীম এবং তার অন্যান্য বন্ধুরা এ বিষয়ে খবর নেয়া শুরু করলো । এক সময় তারা ফারিয়ার মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পারলো । কিন্তু তা ছিল খুবই হৃদয়বিদারক কাহিনী ।
ফারিয়ার মৃত্যু :
কিছুদিন আগে ফারিয়া তার নানাবাড়ী যাওয়ার জন্য বায়না ধরে । ফারিয়ার মা-বাবা কখনো মেয়েকে একা ছাড়েন না । তাই তারা অনুমতি দেন নি । কিন্তু ফারিয়া জিদ করে তার নানাবাড়ি একা একা চলে যায় । পথিমধ্যে কয়েকজন ছেলে তাকে অনুসরণ করে । যখন ফারিহা একটি খালি রাস্তা দিয়ে হাঁটছিল তখন তারা তার সামনে এসে বিভিন্ন কূরুচিপূ্র্ণ কথাবার্তা বলছিল । ফারিয়া ভয়ে দৌড় দিতে যাবে এমন সময় এক ছেলে তা ওড়না টান দিয়ে খুলে ফেললো । তারপর তারা তাকে তুলে নিয়ে একটি পরিত্যাক্ত খালি ঘরে নিয়ে গেল । ফারিয়া তাদের পা ধরে বললো , আমি ছোট । আমাকে ছেড়ে দিন । কিন্তু নরপশুরা কোনো আর্তনাদই শুনলো না । তারা ফারিহার সবচেয়ে দামী জিনিষ সতিত্ব কেড়ে নিলো । ফারিহা বারবার মৃত্যু কামণা করছিলো । অবশেষে নরপশুরা তাদের ক্ষুধা মিটিয়ে তার পেটে আঘাত করে চলে যায় । যাওয়ার পথে একজনের পকেট থেকে মোবাইর পড়ে যায় । ফারিয়া বহুকষ্টে সেই মোবাইল নিয়ে তার বাবাকে ফোন দেয় । কিন্তু ভালোভাবে কথা বলতে না পেরে অজ্ঞান হয়ে যায় । তার বাবা সাথে সাথে পুলিশকে জানায় । পুলিশ সেই নাম্বারের লোকেশন ধরে ফারিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায় । দুইদিন পর ফারিয়ার জ্ঞান ফেরে ।সে পুরো ঘটনা তার মাকে শোনায় । এরপর আবার অজ্ঞান হয়ে যায় । এর তিনঘন্টা পর ফারিয়া এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে পরপারে পাড়ি জমায় ।
মীম এবং তার বন্ধুরা এই ঘটনা শুনে পুরো স্তব্ধ হয়ে যায় । যেই মীম সর্বদা হাসিখুশি থাকতো , সে আজ নিস্তব্ধ । তারা ঠিক করলো , তাদের এলাকার মেম্বারের কাছে এর বিচার চাইবে । ২দিন পর তাদের স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রী প্রতিবাদ করলো মেম্বারের বাড়ির সামনে । আজ তারা তাদের সহপাঠী ফারিয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানাচ্ছে । যাতে সামনে থেকে এমন আর কোনো ফারিয়ার জীবনের আলো এমন অকালে নিঃশেষ না হয়ে যায় । জানা নেই , বাংলাদেশে এটা সম্ভব কিনা ! হয়তো সম্ভব ,আবার অসম্ভবও বটে ।